সোমবার, ডিসেম্বর ১৯, ২০১১

কাজী নজরুল ইসলাম

কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯ — ১৯৭৬)


কাজী নজরুল ইসলাম ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন কাজী নজরুল ইসলাম। চুরুলিয়া গ্রামটি আসানসোল মহকুমার জামুরিয়া ব্লকে অবস্থিত। পিতামহ কাজী আমিনউল্লাহর পুত্র কাজী ফকির আহমদের দ্বিতীয়া পত্নী জাহেদা খাতুনের ষষ্ঠ সন্তান তিনি। তার বাবা ছিলেন স্থানীয় এক মসজিদের ইমাম| তারা ছিলেন তিন ভাই এবং বোন। তার সহোদর তিন ভাই ও দুই বোনের নাম হল: সবার বড় কাজী সাহেবজান, কনিষ্ঠ কাজী আলী হোসেন, বোন উম্মে কুলসুম। কাজী নজরুল ইসলামের ডাক নাম ছিল "দুখু মিয়া"| তিনি স্থানীয় মক্তবে (মসজিদ পরিচালিত মুসলিমদের ধর্মীয় স্কুল) কুরআন, ইসলাম ধর্ম , দর্শন এবং ইসলামী ধর্মতত্ত্ব অধ্যয়ন শুরু করেন। ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে যখন তার পিতার মৃত্যু হয়, তখন তার বয়স মাত্র নয় বছর। পারিবারিক অভাব অনটনের কারণে তাঁর শিক্ষা বাধাগ্রস্থ হয় এবং মাত্র দশ বছর বয়সে তাকে নেমে যেতে হয় জীবিকা অর্জ্জনে। এসময় নজরুল মক্তব থেকে নিম্ন মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে উক্ত মক্তবেই শিক্ষকতা শুরু করেন। তিনিই বাংলা সাহিত্যে ইসলামী চেতনার চর্চা শুরু করেছেন বলা যায়।
১৯২১ সালের ডিসেম্বর মাসে কুমিল্লা থেকে কলকাতা ফেরার পথে নজরুল দুটি বৈপ্লবিক সাহিত্যকর্মের জন্ম দেন। এই দুটি হচ্ছে বিদ্রোহী কবিতা ও ভাঙ্গার গান সঙ্গীত। এগুলো বাংলা কবিতা ও গানের ধারাকে সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছিল। বিদ্রোহী কবিতার জন্য নজরুল সবচেয়ে বেশী জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। একই সময় রচিত আরেকটি বিখ্যাত কবিতা হচ্ছে কামাল পাশা। এতে ভারতীয় মুসলিমদের খিলাফত আন্দোলনের অসারতা সম্বন্ধে নজরুলে দৃষ্টিভঙ্গি এবং সমকালীন আন্তর্জাতিক ইতিহাস-চেতনার পরিচয় পাওয়া যায়। ১৯২২ সালে তার বিখ্যাত কবিতা-সংকলন অগ্নিবীণা প্রকাশিত হয়। এই কাব্যগ্রন্থ বাংলা কবিতায় একটি নতুনত্ব সৃষ্টিতে সমর্থ হয়, এর মাধ্যমেই বাংলা কাব্যের জগতে পালাবদল ঘটে। প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে এর প্রথম সংস্করণ শেষ হয়ে গিয়েছিল। পরপর এর কয়েকটি নতুন সংস্করণ প্রকাশিত হয়। এই কাব্যগ্রন্থের সবচেয়ে সাড়া জাগানো কবিতাগুলোর মধ্যে রয়েছে: "প্রলয়োল্লাস, আগমনী, খেয়াপারের তরণী, শাত-ইল্‌-আরব, বিদ্রোহী, কামাল পাশা" ইত্যাদি। এগুলো বাংলা কবিতার মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল।
নজরুলের প্রথম গদ্য রচনা ছিল "বাউণ্ডুলের আত্মকাহিনী"। ১৯১৯ সালের মে মাসে এটি সওগাত পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। সৈনিক থাকা অবস্থায় করাচি সেনানিবাসে বসে এটি রচনা করেছিলেন। এখান থেকেই মূলত তার সাহিত্যিক জীবনের সূত্রপাত ঘটেছিল। এখানে বসেই বেশ কয়েকটি গল্প লিখেছেন। এর মধ্যে রয়েছে: "হেনা, ব্যাথার দান, মেহের নেগার, ঘুমের ঘোরে"। ১৯২২ সালে নজরুলের একটি গল্প সংকলন প্রকাশিত হয় যার নাম ব্যথার দান। এছাড়া একই বছর প্রবন্ধ-সংকলন যুগবাণী প্রকাশিত হয়।
উইকিপিডিয়া থেকে

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন